ডায়াবেটিসে রক্তে এইচবিএ 1 সি -র মাত্রা কমাতে 13টি উপাদেয় খাদ্য
এইচবিএ 1 সি বা গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন পরীক্ষায় থেকে জানা যায় যে গত কয়েক সপ্তাহ বা মাসগুলিতে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কতো বা কম ছিল
এইচবিএ 1 সি'র মাত্রা আপনাকে ডায়াবেটিস সম্পর্কিত ঝুঁকির বিষয় জানায়
হাইলাইট
- ডায়াবেটিক রোগীদের স্বাস্থের জন্য হলুদ এবং দারুচিনি উপকারী
- ডায়াবেটিক রোগীদের শাক সব্জী খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো উচিৎ
- বাদাম এবং যে কোন ধরনের বীজ জাতীয় খাবার ডায়াদেটিক রোগীদের পক্ষে ভালো
ডায়াবেটিক রোগীরা সবসময় তাদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে থাকেন। প্রতিদিন রক্ত শর্করার পরীক্ষা যেমন আপনাকে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সম্পর্কে অবগত করে, তেমনই এইচবিএ 1 সি বা গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন পরীক্ষায় জানা যায় হত কয়েক সপ্তাহ বা মাস গুলিতে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কত কম বা বেশি ছিল। এই পরীক্ষায় ডায়াবেটিক সম্পর্কিত কোন সমস্যায় আপনি পরতে চলেছেন কি না,সেই সম্পর্কেও জানা যায়। বিশেষ করে নতুন কোন খাদ্যাভ্যাস বা ওষুধ কিংবা শরীরচর্চা শুরু করার আগে অবশ্যই এই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিৎ। সুস্থ ,প্রাক-ডায়াবেটিক ও ডায়াবেটিক এই তিন প্রকার মানুষের ক্ষেত্রেই যদি এইচবিএ 1 সি পরীক্ষায় রকতে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকে তবে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস বদলানো জরুরী।
ডায়াবেটিসের এইচবিএ 1 সি-র মাত্রা কমাতে রইল কিছু খাদ্যের তালিকা –
হলুদ হল এমন একটি মশলা যা স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত উপকারী। হলুদ রকতে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে সক্ষম। টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে হলুদ হৃদ্রোগ ও কিডনি সমস্যার ঝুঁকি কমায়।
কলাই হল এমন একটি প্রোটিন উৎস যাতে গ্লাইসেমেইক সূচক কম থাকে। এবং প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি রেড মিটের অত্যন্ত ভালো একটি বিকল্প। সাধারনত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের রেড মিট খেতে বারন করা হয়। কিন্তু কলাইয়ে রেড মিটের মত সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল থাকে না।
আমন্ড, চীনাবাদাম,আখরোট ,পেস্তা প্রভৃতি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত হয়। এতে এমন একটি তৃপ্তির বিষয় রয়েছে যা আপনাকে অনেক সময় পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকার অনুভব দেয়। বাদাম আপনাকে ক্যালোরি এবং অতিরিক্ত ওজন ঙ্কমাতেও সাহায্য করে।
টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ডিম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। এইধরনের রোগীরা দিনে দু’টো করে ডিম খেতে পারেন। ডিম প্রোটিনের একটি ভালো উৎস যা ব্রেকফাস্ত কিংবা স্ন্যাক্স হিষেবেও বেশ ভালো।
টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে রসূন রক্তে শর্করার পরিমাণ বজায় রাখতে সাহায্য করে। রসূন সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভীষন উপকারী।
দারুচিনি শরীরে এ 1 সি-র মাত্রা কমাতে সাহায্য করে । এমনকি টাইপ টু ডায়াবেটিস সহ রোগীদের শরীরে এইচবিএ 1 সি-র মাত্রা কমাতে 1 গ্রাম দারুচিনিও অত্যন্ত কার্যকর।
চিয়া বীজে গ্লাইসেমেইক সূচক কম কিন্তু এটি একটি উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাদ্য। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপাদেয় এবং রক্তে শর্কজরার মাত্রা নিয়ন্ত্রনেও এটি সাহায্য করে। অন্যান্য খাবার থেকে নিঃসৃত ক্যালোরি কমাতেও চিয়া বীজ সাহায্য করে। চিয়া বীজ ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে এবং অনেকক্ষন পর্যন্ত পেট ভর্তি রাখে।
তিসির বীজ কম শর্করা যুক্ত,এবং কাবারের পর অনেকক্ষন পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকার অনুভব দেয়। এর মধ্যে থাকা অদ্রবীভুত ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা কয়াতে সাহায্য করে।
বাদামী চাল একটি সুক্ষ্ম স্থলশস্য যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয়না। এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত।ডায়াবেটিস রোগীদের উচিৎ সাধারণ চালের বদলে বাদামী চাল খাদয় হিষেবে গ্রহন করা।
বাঁধাকপিতে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগীদের ব্লাড সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। এটি একটি উচ্চ ফাইবার যুক্ত ফসল ,গ্লাইসেমেইক সূচক কম এবং কম ক্যালোরি যুক্ত। ভিটামিন A, K , E,ক্যালসিয়াম,ফলেট,ও আয়রন সমৃদ্ধ। ডায়াবেটিসের রোগীদের সবুজ শাক সবজি খাওয়া জরুরী।
- এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ডায়াবেটিক রোগীদের হৃদরোগ, অতিরিক্ত কোলস্টেরল প্রভৃতি নানান রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। ব্লাড সুগারের মাত্রা কমাতেও সহায়তা করে, অন্যান্য খাবারের সাথে যুক্ত হয়ে অলিভ অয়েল শর্করার রূপান্তর প্রক্রিয়াকে স্থিতিশীল করতে পারে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ইনসুলীনের সংবেদনশীলতা এবং নিম্ন উপবাস রক্ত শর্করার পরিমাণ উন্নত করে। কোন খাবারের সাথে মিলিত অবস্থায় অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার রক্তে শর্করার পরিমাণ 20% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। টাইও টু ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার সেবন করা উচিৎ।
পুর্ন চর্বি বা ফ্যাট যুক্ত দুগ্ধজাত খাবার শরীরে ইনসুলিনের কাজে বাঁধা দেয়। ফলে এইধরনের খাবার খাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই কারণেই ডায়াবেটিক রোগীদের কমফ্যাট যুক্ত দুধ,দই,চিজ খেতে বলা হয়। তবে দুগ্ধজাত খাবারে ভিটামিন D থাকে যা ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
No comments: